ঢাকা: জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটকে ‘দলীয় ও আজ্ঞাবহ প্রশাসন’ লালনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার আয়োজন বলে মন্তব্য করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটের বড় অংশই ব্যয় হবে সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে।
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিক বাজেটে বেসরকারি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতকরা ১০ ভাগ মূল্য সংযোজন করারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ প্রস্তাব বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল পশ্চাৎপদ দেশের জন্য আত্মঘাতী। এ প্রস্তাব দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে পেছনে ঠেলে দেবে। প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ কম রাখা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের দরিদ্র জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়ানো হয়েছে। ৪১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকার নতুন করসহ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৪ কোটি টাকার কর চাপবে জাতির ঘাড়ে। বাজেটের বড় অংশই ব্যয় হবে সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজে। আগামী ১ জুলাই থেকে সরকার যে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, তাতে অতিরিক্ত খরচ হবে ২২ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি ও কৃষকের ভর্ভুকির পরিমাণ এক টাকাও বাড়ানো হয়নি উল্লেখ করে আরো বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় শিল্প ধ্বংস করার প্রবণতা বিদ্যমান। বাজেটে ৩০ শতাংশ বেশি প্রবৃদ্ধি ধরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে,। যা অর্জন অসম্ভব বলে অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেছেন।
শফিকুর রহমান বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে মাননীয় অর্থমন্ত্রী জাতিকে অপার সম্ভাবনার স্বপ্ন ও যেসব আশার বাণী শুনিয়েছেন, বাস্তবতার নিরিখে তা অর্জন করার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কোনো নির্দেশিকা আসেনি। প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটের বেশির ভাগ খরচ হবে পূর্বের ঋণ পরিশোধ, সরকারি প্রশাসনের রক্ষণাবেক্ষণ, বিলাস দ্রব্য আমদানি, অপচয়-দুর্নীতিসহ বিভিন্ন প্রকারের সিস্টেম লস ও কর রেওয়াতের নামে ধনিক শ্রেণীকে বিশাল ভর্তুকি প্রদান ইত্যাদি কাজে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “ সরকার প্রস্তাবিত বাজেটে জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের পরিবর্তে দলীয় ও আজ্ঞাবহ প্রশাসন লালনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার আয়োজন করেছে। মূলত জনগণের ওপর শোষণ ও জুলুম চালিয়ে নিজেদের আখের গোছানোই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল লক্ষ্য।”
0 comments:
Post a Comment